সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালে। সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালামকে সভাপতি ও এটিএম কামালকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৩ সদস্যের একটি আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখানো পর্যন্ত জেলার কোন জায়গাতে মহানগর বিএনপি’র অফিস তৈরী করা হয় নি। নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বারেই সীমাবদ্ধ মহানগর বিএনপি’র বর্তমান রাজনীতি। এমনটাই মনে করেন জেলার রাজনৈতিক বোদ্ধামহল।
ক্রমশই রাজপথ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মহানগর বিএনপি। এই কমিটির সভাপতি আবুল কালামকে এখন আর রাজপথে দেখা যায় না। অন্যদিকে এটিএম কামাল ব্যক্তিগত কারণে কিছুদিন পরপরই বিদেশ ভ্রমণ করে থাকেন। কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অবহেলাতেই নাজেহাল অবস্থা মহানগর বিএনপি’র। মূলত তাদের কোন অফিস না থাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে একত্রিত হতে পারেন না তারা। আর সে কারণেই রাজপথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে মহানগর বিএনপি।
দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ১৪ মাস কারাগারে আছেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁর মুক্তির দাবীতে নারায়ণগঞ্জে সভা, সমাবেশ, গণ অনশন, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচী পালনেও অনীহা লক্ষ্য করা যায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বেশীরভাগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাদের দাবী শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। দাবী আদায়ের বাহক হিসেবে তারা ফেইসবুককেই বেছে নিয়েছেন। শুধুমাত্র গুটি কয়েকজন নেতাকর্মী দেখা যায় রাজপথে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করতে। আর বেশীরভাগ নেতাকর্মীরা মিডিয়ার সামনে চোখের জল ফেলে মায়া কান্না কাদেঁ আর ফেইসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা নেই বললেই চলে। তারা তাদের সিনিয়র নেতাদের নির্দেশনা মানতে নারাজ। তারা নিজেই নিজেদেরকে অনেক বড় নেতা মনে করে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৪ মাস যাবৎ জেলে। সেই দিকে তাদের কোন খেয়াল নেই। তারা নিজেরা নিজেদের পদ ব্যবহার করে তাদের ব্যক্তিগত চাহিদা মেটাতেই ব্যস্ত। অথচ দলীয় কোন কাজে ডাকলে তাদেরকে খুজে পাওয়া যায় না। সাংবাদিকরা তাদের কাছ থেকে জানবে কীভাবে? সিনিয়র নেতারা কেউ ঘর থেকে বের হয় না, কেউ বিদেশ থাকে আবার কেউ মন্তব্য করতে চায় না। এই সকল বিষয়গুলো অত্যন্ত দুঃখজনক।
এদিকে নিজের পদবীকে মূল্যয়ন করেনা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। তার মতে সহ-সভাপতি কোন গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট নয়! মহানগর বিএনপির কমিটি পূর্ণগঠনের বিষয়েও তার কোন মন্তব্যে নেই।
দুই বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জেলার কোন জায়গাতে নিজস্ব অফিস না থাকাকে অনেকেই আপনাদের ব্যর্থতা মনে করছেন।
সচেতন মহলের মতে, তারা চাইলেই ঐক্যবদ্ধ হতে পারে এবং তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবী জানাতে পারে। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া জেলে এটা তাদের ব্যর্থতা। আর তাদের ব্যর্থতার ফল পাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া।